মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলা হিসেবে ঘোষিত দিরাইয়ে পুরো রমজান মাস জুড়েই ছিল বিদ্যুতের লোডশেডিং। কোন কারণ ও আগাম ঘোষণা ছাড়াই প্রতিদিন কমপক্ষে ১০/১৫ বার করে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার ঘটনায় অতিষ্ট জনজীবন। বিশেষ করে প্রতিদিনই কোন না কোনভাবে সেহরি ও ইফতারে বিদ্যুৎ থাকছে না। তাছাড়া আকাশ সামান্য মেঘলা হলেই বিদ্যুতের ছুটির ঘণ্টা বেজে যায় দিরাইয়ে।
রমজান শেষ হওয়ার পথে বাজারে ব্যবসায়িরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় আছেন। এরই মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটছে। বার বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় আমাদের জেনারেটর স্টার্ট দিতে দিতেই সময় নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।
দিরাই লঞ্চঘাটের ফার্নিচার দোকানের নকশার কারিগর মোঃ আল আমিন জানান, বার বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার ফলে মেশিনারি জিনিষ নষ্ট হয়। তাছাড়া কাজের মধ্যে বিঘ্নতা ঘটে, এই সমস্যা থেকে আমরা উত্তরণ চাই।
একই কারখানার কাঠমিস্ত্রি ও কুন্দানির কারিগর মোঃ সালিম উদ্দিন জানান, ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে কাজে সময় নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি আতঙ্কও থাকে যে, কখন আবার মেশিন নষ্ট হয়ে যায়।
একই রোডের ব্যবসায়ি বিলাস রেস্টুরেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আশরাফ আলী বলেন, ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার ফলে হোটেল ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। বিদ্যুতের এ লোডশেডিংয়ের কারণে আগত ক্রেতারা বিরক্ত বোধ করেন। তাছাড়া হোটেলের মোটর ও ফ্রিজগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি।
দিরাই বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সাবস্টেশনের আওতায় বাণিজ্যিক ও আবাসিক মিলিয়ে দিরাই, শাল্লা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার (আংশিক) মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৫ হাজার ৬২৩ জন। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে দিরাই উপজেলা বিদ্যুতের উপ-বিভাগীয় আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল মালেককে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
এদিকে দিরাই পল্লীবিদ্যুতের এজিএম মোঃ নূরুল ইসলাম জানান, এ অফিসের আওতায় দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫৩ হাজার ৪২৬ জন। তিনি দাবি করেন, দিরাই অফিসের আওতায় কোন লোডশেডিং নেই, দিনে খুব ভালো বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। তবে রাতের বেলায় ঝড়-বৃষ্টি হলে সুনামগঞ্জ থেকে বন্ধ করে দেয়। ফলে আমামর এলাকায়ও বিদ্যুৎ থাকে না।